এইচএসসি পরিক্ষার্থীর ভূগল প্রথম পত্র এসাইনমেন্ট ২০২১ সমাধান
পৃখিবীর গঠনঃ
সৃষ্টির
প্রথম অবস্থায় প্রথিবী একটি জলন্ত গ্যাসপিন্ড ছিল। সময়ের পরিবর্তনে তাপমাত্র্রা হ্রাস
পেয়ে গ্যাসীয় অবস্থা পরিবর্তিত্ তরল অবস্থাস রূপান্তরিত হয়েছে । ফলে ভারী পদার্থ সমূহ
পৃথিবীর কেন্দ্রে এবং হালকা পদার্থ সমূহ পৃথিবীর উপরের দিকে জমা হয়ে অভ্যান্তরীণ ও
বাহ্যিক গঠনে ভিন্নতা তৈরি হয়েছে। বর্তুলাকার পৃথিবীর ব্যাসার্ধ প্রায় ৬৪০০ কিলোমিটার
। পৃথিবীর বহিরাবরণকে ভূ-ত্বক বলে।অভ্যন্তরভাগ রয়েছে। ভূ-বিজ্ঞানীরা বিভিন্নভাবে পৃথিবীর মাত্র ০.৫% ভাগ ভূঅভ্যন্তর সম্বন্ধে জানতে পেরেছেন। পৃথিবী বিভিন্ন প্রকার খনিজ ও শিলা দ্বারা গঠিত। মানুষের আবাসস্থল হিসেবে পৃথিবীর গুরুত্ব অপরিসীম। এই পর্বে আমরা পৃথিবীর বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ গঠন সম্পর্কে আলোচনা করব
পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ গঠনঃ
ভূ-অভ্যন্তরের প্রধান স্তর : ভূকম্প তরঙ্গের গতিবেগ এর। বৈষম্য বিশ্লেষণ করে জানা যায় যে, পৃথিবীর অভ্যন্তর তিনটি প্রধান স্তর বা অঞ্চলে বিভক্ত যথাসবচেয়ে ওপরে ভূত্বক তার নিচে গুরুমন্ডল এবং তারও নিচে কেন্দ্রমন্ডল। ভৌত - রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী এই তিনটি প্রধান অঞ্চলের | প্রত্যেকটি কে দুটি করে উপস্তর(sub layer) বা উপ বিভাগে ভাগ করা যায়,
যেমন :
১.ভূ-ত্বক(Crust)- (অ) মহাদেশীয় ভূত্বক (আ) মহাসাগরীয় ভূত্বক
২.গুরুমন্ডল (mantle)- (অ)উর্ধ্ব গুরুমন্ডল (আ) নিম্ন গুরুমন্ডল উর্ধ্ব গুরুমন্ডল ও ভূত্বকের মাঝে মোহোরোভিসিক বিযুক্তি রেখা রয়েছে।
৩.কেন্দ্রমন্ডল: (অ)বহিঃস্থ কেন্দ্রমন্ডল (আ) অন্তঃস্থ কেন্দ্রমন্ডল গুরুমন্ডল ও.কেন্দ্রমন্ডলের মধ্যে কার বিযুক্তিটিকে উইচার্ট গুটেনবার্গ বিযুক্তি বলে।
পৃথিবী অভ্যন্তরীণ গঠন চিত্র
A.ভূত্বক (crust):
1.ভূত্বকের বেধ বা গভীরতা সব জায়গায় সমান নয়, মহাসাগরের তলদেশে ভূত্বক অপেক্ষাকৃত পাতলা বা ভূত্বকের গভীরতা কম।
2.মহাসাগরীয় অংশে ভূত্বকের গভীরতা 5-6 কিলোমিটার।
3.মহাদেশের তলদেশে ভূত্বক অপেক্ষাকৃত পুরু বা ভূত্বকের গভীরতা বেশি।মহাদেশীয় ভূ-ত্বকের গভীরতা 30 থেকে 40 কিলোমিটার।নবীন পার্বত্য এলাকায় ভূত্বকের গভীরতা 90 কিলোমিটারের বেশি।
4.ভূত্বকের মহাদেশীয় অংশ সিলিকন ও অ্যালুমিনিয়াম অর্থাৎ সিয়াল দিয়ে তৈরি এটি অপেক্ষাকৃত হালকা স্তর এই স্তরের ঘনত্ব 2.65 থেকে 2.85 গ্রাম/ ঘন সেন্টিমিটার।
5.ভূত্বকের মহাসাগরীয় অংশ সিলিকন ও ম্যাগনেসিয়াম দিয়ে তৈরি এটি অপেক্ষাকৃত ভারি স্তর এই স্তর কে সীমা বলা হয়। এই স্তরের ঘনত্ব 2.87 থেকে 3.0 গ্রাম/ ঘন সেন্টিমিটার।
6.মহাদেশীয় ভূত্বক প্রধানত গ্রানাইট জাতীয় শিলা দিয়ে তৈরি কিন্তু মহাসাগরীয় ভূত্বক ব্যাসল্ট জাতীয় শিলা দিয়ে তৈরি হয়েছে।
7.মহাদেশীয় ভূত্বক ও মহাসাগরীয় ভূত্বক একে অপরের থেকে কনরাড বিয়তি তল এর দ্বারা তালান হয়ে রয়েছে।
৪.ভুত্বকের নিচে রয়েছে গুরুমন্ডল মোহো বিযুক্তিতল ভূত্বকে গুরুমন্ডল থেকে আলাদা করে রেখেছে। মোহো বিযুক্তি তল এর পুরো নাম হল। mohorovicic বিযুক্তিতল।
I
পৃথিবীর উপরের অংশটিকে ভূত্বক বা ভূপৃষ্ঠ বলা হয়ে থাকে। পৃথিবীর। উপরিপৃষ্ঠ সব জায়গায় সম প্রকৃতির নেই কোথাও উঁচু বা কোথাও নিচু। পৃথিবীর উপরিপূষ্ঠে যে ভূমিরূপগুলি দেখা যায় সেগুলিকে উচ্চতার উপর
ভিত্তিকে করে প্রধান তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়, যথা - সমভূমি, মালভূমি ও পাহাড় বা পর্বত এখানে আমরা পর্বতের শ্রেণীবিভাগ সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করবো। পর্বত বলতে পৃথিবীর উপরিভাগের সুউচ্চ অংশ গুলিকে বোঝানা হয়ে থাকে সাধারনত পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে ১০০০ মিটারের বেশি উচ্চতা বিশিষ্ট, বহুদূর বিস্তৃত, খাড়া ঢালযুক্ত ও উঁচু শৃঙ্গযুক্ত শিলাময় ভূমিরূপগুলিকে পাহাড় বা পর্বত হিসাবে গন্য করা হয় একাধিক পর্বত পরস্পরের সমান্তরালে বিস্তৃত হলে তাকে পর্বতশ্রেনী বলে। যেমন - হিমালয় পর্বতশ্রেনী, আল্পস পর্বতশ্রেনী প্রভৃতি। তবে পাহাড়ের উচ্চতা পর্বতের উচ্চতার থেকে কম হয়ে
পর্বতের শ্রেনীবিভাগ- -পর্বত গুলিকে তাদের উৎপত্তি, গঠন, উচ্চতা, আকৃতি ও ঢালের তারতম্যের উপর ভিত্তি করে পর্বত গুলিকে চারটি শ্রেনীতে ভাগ করা হয়ে থাকে, যথা
(ক) ভঙ্গিল পর্বত,
(খ) স্কুপ পর্বত,
(গ) আগ্নেয় পর্বত ও
(ঘ) ক্ষয়জাত বা বিচ্ছিন্ন পর্বত
ভঙ্গিল পর্বত বা ভাজ পর্বত - পাচাপের ফলে ভূপৃষ্ঠের উপরের নরম শিলা। ভঙ্গিল পর্বত বা ভাজ পর্বত - পার্শ্বচাপের ফলে ভূপৃষ্ঠের উপরের নরম শিলা ভঁজ পেয়ে তরঙ্গের মতো যে বিশাল আকৃতির পর্বতের সৃষ্টি হয় তাকে ভঙ্গিল পর্বত বলে। যেমন - এশিয়ার হিমালয় (নবীনতম), দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজ পর্বত, উত্তর আমেরিকার রকি পর্বত, ইউরােপের আল্পস পর্বতমালা ভঙ্গিল পর্বতের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
ভঙ্গিল পর্বতের বৈশিষ্ট্যঃ 2 মহীখাত অঞ্চলে সঞ্চিত পাললিক শিলায় ভাজ পরে ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি
হয়ে থাকে। 2 ভঙ্গিল পার্বত্য অঞ্চলে জীবাশের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
ভাজ পর্বত গুলি বহু দূর অবধি বিস্তৃত, দীর্ঘায়িত ও সুউচ্চ পর্বতচূড়া বিশিষ্ট | অনেক গুলি পর্বতশৃঙ্খলের সমন্বয়ের গঠিত হয়ে থাকে। তবে ভঙ্গিল পর্বত
গুলির দৈর্ঘ্য প্রস্থের থেকে অনেক বেশি হয়ে থাকে। 2 ভূমিকম্প প্রবন - ভঙ্গিল পর্বত গুলির গঠন এখনাে চলতে থাকায় এই অঞ্চল
|
তিল ভমিকম্প প্রবন হয়ে থাকে।
স্তুপ পর্বত - পৃথিবীর অন্তর্জাত শক্তির ফলে সৃষ্ট টান বা প্রসারন এবং সংকোচন বা পার্শ্বচাপের ফলে ভূত্বকে যে ফাটল বা চ্যুতির সৃষ্টি হয় সেই ফাটল বা চ্যুতি বরাবর ভূত্বকের কোন একটি অংশ উপরে উঠে গিয়ে বা পার্শ্ববর্তী অংশ নিচে বসে গিয়ে যে পর্বতের সৃষ্টি হয়, তাকে স্তুপ পর্বত বলে। স্তুপ পর্বত গুলি হোস্ট পর্বত নামেও পরিচিত। তবে সব স্তুপ পর্বতই হোস্ট নয়। দুটি চ্যুতির মধ্যবর্তী কোন ভূখন্ড উল্লম্বভাবে উখিত হলে তাকে হােস্ট বলা হয়। আবার দুটি সমান্তরাল ফাটলের দুপাশের ভূমিরূপ অবনমিত হলে মাঝের অংশটি উঁচু হয়ে দাড়িয়ে থেকে স্কুপ পর্বতের সৃষ্টি করে। উদাহরণ - সারা পৃথিবীব্যাপী এই ধরনের স্তুপ পর্বতের উপস্থিতি লক্ষ করা।
যায়। ভারতের পশ্চিমঘাট পার্বত্য অঞ্চল ও আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের গ্রেট বেসিন অঞ্চল স্তুপ পর্বতের উদাহরন এবং ইউরোপের জার্মানির রাইন নদীর গ্রন্থ উপত্যকার পশ্চিমে অবস্থিত ব্ল্যাক ফরেস্ট পর্বত, ভারতের সাতপুরা, বিন্ধ্যপর্বত হোস্টের উস্লেখযােগ্য উদাহরণ। স্তুপ পর্বতের বৈশিষ্ট্যঃ ভূত্বকের একটি বিশাল অংশের উত্থান বা অবনমনের ফলে এই ধরণের স্কুপ পর্বতের সৃষ্টি হয়ে থাকে। দুটি হোস্ট বা স্তুপ পর্বতের মাঝে যে নিচু অংশ।
থাকে তাকে গ্রাবেন বা গ্রস্ত উপত্যকা বলা হয়। যেমন - পূর্ব আফ্রিকার গ্রস্ত উপত্যকা, জার্মানির রাইন নদীর গ্রস্ত উপত্যকা, ভারতের নর্মদা নদীর গ্রস্ত
উপত্যকা প্রভৃতি। স্তুপ পর্বত এক দিকের ঢাল খুব খাড়া হয় ও অন্যদিকের। | ঢাল মৃদু প্রকৃতির হয়।। স্কুপ পর্বতের বিস্তৃতি খুব সামান্য হয়ে থাকে। স্তুপ পর্বতের উপরিভাগ প্রায় সমতল হয়ে থাকে।
No comments